পাপ # লেখক_মোঃ_আঃ_আজিজ - ডার্ক ওয়েব - হিট স্ট্রোক
হিট স্ট্রোক
প্রচণ্ড গরমে ছটফট করছে লিমির পাঁচ মাসের মেয়ে রাইসা। সমানে দরদরিয়ে ঘাম ঝরছে মাথা আর সারা শরীর বেয়ে। সেই দুপুর থেকে একনাগাড়ে কেঁদে চলছে মেয়েটা। উপায়ান্তর না দেখে স্বামী রিফাতকে কল দিল লিমি,
- গরমে মেয়েতো থাকতে পারছে না, কেমন যেন ছটফট করছে।
- গরম কি তোমার আর তোমার মেয়ের একার লাগছে! সব জায়গায়ই গরম। ফ্যান ছেরে ফ্যানের নিচে বসে থাকো। জরুরী কাজ করছি আমি, এখন ডিস্টার্ব করোনা।
কথাগুলো বলে রিফাত কেটে দেওয়ার পর, মনটা খারাপ করে ফোনটা পাশে রাখলো লিমি। "গট-গট্টর" একটা শব্দ হয়ে হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল বাসার একমাত্র সিলিং ফ্যানটা। আবার লোডশেডিং! প্রচন্ডরকম ঘামছে রাইসা। অস্বাভাবিক রকম ভাবে চোখটা বড় বড় করে তাকিয়ে কেঁদেই যাচ্ছে। হঠাৎ কেমন যেন কান্নাটা বন্ধ হয়ে চোখ দুটো বড় বড় করে সারা শরীর ঝাকি দিয়ে উঠল রাইসার। লিমি ওর হাত-পা-মাথা ডলতে লাগলো, কোন কিছুতেই কিছু যেন বুঝে উঠতে পারছে না ও। হঠাৎ ভয়ানক রকম ভাবে কাপতে শুরু করলো রাইসার শরীরটা। লিমি কি করবে বুঝতে না পেরে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলো রাইসাকে। জড়িয়ে ধরে থাকা অবস্থাতেই লিমি টের পেল, নিস্তেজ হয়ে গেছে রাইসার শরীর।
ছোট্ট বুকটা একটু পর পর আর উঁচু হয়ে উঠছে না ওর নিঃশ্বাসে। বাইরে ঘন মেঘে কালো হয়ে এসেছে সমস্ত আকাশ। গুড়ু-গুড়ু ডাক দিয়ে মেঘ বেয়ে গড়িয়ে পড়ল বৃষ্টির প্রথম ফোটা। গাছের ভেজা পাতার মতই লিমির অশ্রুতে ভিজে উঠেছে রাইসার প্রাণহীন মুখটা। তবে সেও আর রাইসার মুখে পড়ে থাকা অশ্রুর ফোটাটি মুছে দিতে পারল না। কিভাবে পারবে, মেয়ে হারানোর শোক সইতে না পেরে সেও যে একইসাথে চলে গেল, মেয়ের হাত ধরে। খাটের উপর এক পরম আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরে বসে রইল দুইটি নিথর দেহ।
#রোদ্র_প্রেমকথন
তাসমিয়া তাহমিদ ইশারা
সুচনা পর্ব।
সোহাগনগর এর মিয়া বাড়িতে আজ খুশির ঢল উঠেছে কারন আজ তাদের বাড়ির বড় ছেলে গ্রামে আসছে।
সকাল হতেই ছোটো চাচা আব্দুল মিয়া হাটেঁর টাটকা বড় রুই মাছ আর গ্রামের চাষিদের থেকে তরতাজা তরকারী খুজে চলেছে।
রেশমা বেগম ঘরের পালিত মুরগি জবাই করেছে। তাদের বাড়িতে আজ তাদের বড় জাঁ আসবে তার ছেলেকে নিয়ে।
রোদ, ও রোদ মা। রোদ মা কইরে.!
আরে তাড়াতাড়ি আয়, এতো বাজার সদাই কি একা হাতে আনা যায়।
আইতেছি বাপজান.!
বাপজান আমার লাইগা কি আনছো?
আরে মা, আজ তো তোর বড় মা আইবো। তাই আজ সব তোর বড় মা আর আমাগো নয়নের জন্য।
নয়নের নাম শুনতেই রোদের মাঝে লজ্জারাঙা ভাব আসলো।
গ্রামে থাকলেও সে সবসময় বড় বাড়ির মিলি আপার মোবাইলে নয়নকে রোজ একবার করে দেখে আসে, মেলা সুন্দর সুন্দর ছবি তুলে নয়ন ভাই। দেখতে একদম রাজপুত্রর মতোন।
আরে তুই এখনো দাঁড়িয়ে কি ভাবছিস, সব নিয়ে ভেতরে আয়। দেখো মেয়ের কান্ড বাইরে দাঁড়িয়ে কি ভাবনায় ডুকে গেলি.!
আসছি মা।
সুর্য তার সর্বোচ্চ তাপ দিয়ে যাচ্ছে, এই দিকে বড় গাড়ি প্রবেশ করলো এই অজপাড়া গায়ে।
সবাই শুধু গাড়ির দিকে তাকাচ্ছে।
যদিও এই গ্রামের বড়লোক বলতে বড় বাড়ির মিলি আপার ফুফুরাই। শুধু তারাই একমাত্র গাড়ি নিয়ে আসে।
মিয়া বাড়ির টিনের গেইটে শাড়ি পড়া এক মহিলার প্রবেশ। তা দেখেই বাড়ির বাচ্চারা তাদের খেলাধুলা শোরগোল ছেড়ে ওইদিকে ছুটে গেলো।
বড় মা এসেছে বড় মা এসেছে।
মধ্যবয়স্ক মহিলাটি হাসি দিয়ে সবাইকে নিজের হাতের ইশারায় ডাক দিলো সবাই অমনি ছুটে চলে এলো।
ভদ্র মহিলা তার ব্যাগ থেকে ১০০টাকার ২টা কচকচে নোট বের করে বাচ্চাদের হাতে দিলো আর বলল সবাই মিলে এটা দিয়ে মজা কিনে খেয়ো।
তা দেখে সবার সেই কি লাফালাফি, সব ফেলেই ভৌঁ দৌড় রহিম মিয়ার দোকানে।
টং দোকানে চা থেকে শুরু করে লজেন্স আর চপ পাওয়া যায়,সন্দেশ ও আছে।
কৈ গো বাড়িতে আছিস তোরা কেউ..!
বড় মায়ের আওয়াজ শুনেই মা কাকিরা রান্না ফেলে বাইরে ছুটে আসলো আর আমাকে উনুনের পাশে বসিয়ে গেলো।
ইশ কতো শখ ছিলো বড় মা কে দেখবো। তা না, সবাই আমায় ফেলেই চলে গেলো.!
আরে বুবু, কতোদিন পর আপনারে দেখতেছি, আমাগো রে তো আপনে ভুইলাই গেছেন।
আরে না না, তোমাদের ভুলে থাকা যায়। আমার মন টা কতোবার যে তোমাদের কাছে ছুটে আসতে চায়। কিন্তু তোমাদের নিলা সে কি আমায় আসতে দেয়।
কিন্তু এবার পণ করে এসেছি আমি এখানে থাকবো ১মাসের মতো।
বড় মায়ের কথা আমার কানে আসছে, ইশ বড় মা একমাস থাকবে তার মানে শহরের বাবু(নয়ন) ও থাকবে।
ইশ আমি যে কি ভাবিনা।
তোমরা সবাই এলে রোদেলা আর রিংকি, দিপাকে দেখছিনা যে।
কিরে রোদ কই তুই বড় মা এসেছে বলে কি পালিয়ে গেলি নাকি!
মা তাড়াতাড়ি এসে আমায় পাঠিয়ে দিলেন আমিও বড় মায়ের কথায় ছুটে চললাম।
তখন দেখলাম দরজায় কারোর প্রবেশ কাধে ব্যাগ, হাতেও ভারী ব্যাগ। কালো রঙের একটা শার্ট পড়া আর চোখে চাপানো চশমা যেন নিজেকে খুব ই গম্ভীর হিসেবে পরিচয় দিতে চাইছে তার বেশভুষা।
এক ধ্যানে তাকিয়ে আছি ঠিক তখনি,!!
চলবে.!